কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি জব রিপ্লেস করবে? না নতুন জব তৈরী করবে !
কতটা পাওয়ারফুল কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গতানুগতিক জব রিপ্লেস করবে? না নতুন জব তৈরী করবে !
Devin, AI সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে দেখে আমি, এই ৫টা কারণে ভয়(!) পাইছিলাম।
১. TabNine, Github Copilot, এমনকি chatGPT, Google Bard (Gemini) AutoGPT, midjourney Ai কে আমরা সবাই প্রোডাক্টিভিটি টুলস হিসেবে চিন্তা করেছি। যেগুলা ছোট ছোট কোড ব্লক জেনারেট করে দিচ্ছে। গুগলে সার্চ দেয়ার কাজটা কমাচ্ছে। টাইপিং এর দরকার কমাচ্ছে। তবে মিডিয়াম, লার্জ প্রজেক্ট বা রিয়েল ওয়ার্ল্ড প্রজেক্ট করে দিতে পারতেছে না।
Devin কিন্তু প্রোডাক্টিভিটি টুলসের পথে হাটতেছে না। বরং সে যে পথে হাটতেছে নেক্সট ৫-৭-১০ বছরে ডেভিন, কেভিন, নবিন বা “মমিন AI” নামের কেউ কমপ্লেক্স প্রজেক্ট করে দেয়া শুরু করলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। কারণ সে ধীরে ধীরে ম্যাচিউর হচ্ছে
.
২. একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আমি: ডকুমেন্টেশন পড়ে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করি। এপ্লাই করি, এরর খাইলে ব্রাউজার ডেভটুলস বা IDE তে ডিবাগ করি, সমস্যা ধরতে পারলে সেটা ফিক্স করে চেক করি ঠিক হইছে কিনা। ডেপ্লয় করি। গিটহাব থেকে প্যাকেজ নেই, গুগল/chatGPT দিয়ে উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। API ডকুমেন্টেশন পড়ি।
.
ডেভিন নতুন প্রজেক্ট সেটাপ করতে পারে, প্যাকেজ আপডেট করতে পারে, ফিচার ইমপ্লিমেন্ট করতে পারে, কোডবেজ পড়ে বাগ খুঁজে বের করতে পারে, ডিবাগ করতে পারে, গুগল থেকে এনসার বের করতে পারে, নতুন জিনিস শিখতে পারে। upwork এর প্রজেক্ট করতে পারে বিরতিহীন ভাবে। যেখানে মানুষের বিশ্রাম এর প্রয়োজন পড়ে।
.
৩. আজকে ডেভিন ১৩% বাগ (github issues) ফিক্স করতে পারছে। সামনের দিন গুলিতে তার ইফিসিয়েন্সি কমবে না। বরং বাড়বে। কারণ সে এখন সদ্য জন্মগ্রহণ করা শিশু,
.
৪. ওরা তাদের ওয়েবসাইট এ ক্লেইম করছে– Devin is a tireless, skilled teammate, equally ready to build alongside you or independently complete tasks for you. অথাৎ আমরা মানুষেরা সপ্তাহে ৫ দিন, প্রতিদিন ৮ ঘন্টা অফিসের মধ্যে (মিটিং ছাড়া) ৩-৫ ঘন্টা কোড করি। অন্যদিকে AI বাবাজির তো ছুটি লাগবে না। প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা করে সপ্তাহে ৭ দিন কাজ করবে। আর ডেভিন Ai টিমমেম্বার হিসেবে জায়গা পেলে, কারো না কারো জায়গাতো সে খাবেই।
.
৫. (বোনাস) Scott Wu, এবং তার ভাই Neal Wu দুই ভাই ই codeForces এর লিজেন্ডারী গ্রান্ড মাস্টার। অর্থাৎ তারা দুনিয়ার সেরার চাইতেও সেরা কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামার তারা। এবং তাদের ফাউন্ডিং টিমের ১০ টারও বেশি IOI এর গোল্ড মেডেল। (চিন্তাও করা যায় না)
—-
এখন তোমরা যারা: সিরিয়াসলি CSE, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, এপ ডেভেলপমেন্ট, প্রোগ্রামিং শিখতেছো– তোমাদের জন্য একটা সুখবর: এতদিন যারা না বুঝে হুজুগে বাঙ্গালী হয়ে প্রোগ্রামিং এর লাইনে আসতে চাচ্ছিলো। অর্থাৎ কম্পিউটার সাইন্স বা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং তারা ভয় পেয়ে এই লাইন ছেড়ে দিবে। তাই যারা এই লাইনে সিরিয়াসলি ভালো করতে চায় তাদের জন্য রাস্তা সহজ হবে। এছাড়াও–
.
১. AI কিন্তু হাওয়া থেকে বুঝবে না কি কাজ করতে হবে। তাকে আরেকজন কমান্ড / নির্দেশ দিবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবে। কে কমান্ড দিবে? একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কমান্ড দিবে।
.
২. একজন ভালো প্রোগ্রামার এর কোডও রিভিউ করতে হয়। সেক্ষেত্রে AI এর কোডও রিভিউ করতে হবে। অর্থাৎ হিউম্যান সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর ডিমান্ড থাকবেই। এখন তোমার মনে হতে পারে টিম সাইজ কমে যেতে পারে। ৫ জনের জায়গায় ৩ জন দরকার পড়বে। তবে আমার মনে হয় (আমার ধারণা) এইটাও হবে না। কারণ প্রচুর কাজের অপরচুনিটি তৈরি হবে। তবে সেটা অন্যরকম গতানুগতিক নয়,
.
৩.সব টেকনোলজিক্যাল অভ্যুথান কিছু জব কিল করে। বিশেষ করে যারা টেকনোলজি এডাপ্ট করে না। অপরচুনিটি গ্রাব করে না। তাদের চাকরি খেয়ে দেয়। আর যারা এডাপ্ট করে, তারা আগের চাইতে দুই-তিনগুণ ভালো করবে।
যেমন ChatGPT এর কারণে জব কিন্তু কমে নাই। বরং ChatGPT দিয়ে সফটওয়্যার বানানোর জব বাড়ছে। (আমিও বেশ কয়েকজন AI এর মাধ্যমে বেশ কয়েকটা টুলস বা সফটওয়্যার বানাইছি। আরো বানাবো। )
.
Prompt ইঞ্জিনিয়ার নামের চাকরি শুরু হয়েছে। অনেক অনেক এন্টারপ্রেনার chatGPT দিয়ে টুলস বানাচ্ছে। সেগুলা বানানোর জন্য আরো মানুষ হায়ার করতেছে। [ এমনকি Devin ও কিন্তু chatGPT বেইজড সফটওয়্যার।]
.
৪. একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এর কোডিং ছাড়াও অনেক অনেক কাজ আছে। টিম ওয়ার্ক, ক্রিটিক্যাল থিকিং, প্রজেক্ট এর কমপ্লেক্সিটি নিয়ে ইনডেপ্ট চিন্তা করা। সব সময় রেডিমেট সল্যুশন ইউজ করতে পারি না। কাস্টমাইজ করে নিতে হয়। অল্টারেন্টিভ ডিসিশন নিতে হয়। ফিচারকে চেইঞ্জ করতে হয়। ক্লায়েন্টের মুখের কথার বাইরেও মনের কথা ফিল করে সেই অনুসারে কাজ করতে হয়।
.
৫. Devin বা এইসব AI টুলস বানিয়ে কোম্পানিগুলো স্রেফ ব্যবসা করতে চাচ্ছে। সেগুলাকে কেউ না কেউ ইউজ না করলে, তাদের ব্যবসা হবে না। সেটা তারা ভালো করেই জানে। সো, তুমি সেই devin বা এই টাইপের টুলসগুলার ইউজারই হয়ে যাও। তোমার প্রোডাকটিভি সুপার হাই লেভেলে নিয়ে যাও। দেখবে তোমাকে কেউ ঠেকাতে পারতেছে না।
.
ফাইনালি, Devin মতো চটকদার জিনিস দেখে– তুমি যেটা করতেছিলা সেটা স্টপ করে দেয়া বোকামি। বরং যেটা করতেছিলা সেটাই করতে থাকো। সেটা করতে করতে দেখো এই টাইপের টুলসগুলা কিভাবে কাজে লাগাতে পারো। তাহলেই হবে।